আব্দুল আলীম নোবেল

আজকের পদক্ষেপ আগামীর পরিকল্পিত কক্সবাজার। বদলে যাচ্ছে দেশ বদলে যাচ্ছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। ডিজিটাল বাংলাদেশের পরে পরিকল্পিত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন মানুষ। এই যাত্রার উল্টো পথে হাটছেন এই নগরী। কোন কিছু পরিকল্পিতভাবে এগুচ্ছেনা। এই সবেরর বিরুদ্ধে কথা বলতে পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলন প্রথম পদক্ষেপ। ১২০কিলোমিটার বালুকাময় বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। গর্বিত বাঙ্গালীর আরেক গর্বের ধন পর্যটন নগরী কক্সবাজার। বিশ্বের অনেক দেশ, বাংলাদেশকে না চিনলেও কক্সবাজারকে চেনেন বিশ্বময়। আর সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে উন্নয়নের যাত্রা কোন খানে কমতি নেই এই যাত্রা কক্সবাজারেও। দেশের ইতিহাসের সর্ববৃহত মেগা প্রকল্পসহ বেশ কয়টি প্রকল্পের কাজ চলছে সমান তালে এই অঞ্চলে। উন্নয়নের এমন যাত্রা গণ মানুষের কল্যাণে হোক। তবে আগামী প্রজন্মের জন্য পরিকল্পিত বাসযোগ্য পৃথিবীর অধিকার যেন কেড়ে নেয়া না হয়। পরিবেশ পরিস্থিতির উল্টো স্রেুাতের মুখোমুখি দেখতে চাই না এই জনপদের মানুষ। দেখতে চাই একটি উন্নত পরিকল্পিত কক্সবাজার।

কক্সবাজার শহরসহ জেলার আট উপজেলার শহর গুলোতে গড়ে ওঠা স্থাপনা ও নির্মাণ যাত্রার চিত্র মুটেও ভাল নয়। বিশেষ করে কক্সবাজার শহরটি অবস্থা অন্যরকম। যানযটতো আছেই, গিজগিজ ঘর বাড়ি হোটেল,মোটেল,আবাসিক,রেস্তুরা,অফিস আদালত কোনটির নির্মাণের ক্ষেত্রে শতভাগ মানা হয়নি বিল্ডিংকোড। প্রতিনিয়ত চলছে ইট পাতুরের নির্মাণ শৈলির অপখেলা। কেউ মানেনি দেড় শত বছরেরও বেশি বয়সি কক্সবাজার পৌরসভার কর্তৃত্ব। যা হওয়ার কথা তাতো হয়নি এই নগরীর। শুধু বেড়েছে মানুষের বসবাস। তাদেরই প্রয়োজনে পদদলিত হয়েছে মাষ্টারপ্লান। সবাখানে উপেক্ষিত এটি। যে কেউ কক্সবাজারে পা রাখতেই ভেসে ওঠে একটি অপরিকল্পিত কক্সবাজারের প্রতিচ্ছবি। এতে দেশবিদেশী পর্যটকরা অনেকটা আগ্রহ হারিয়ে পেলেন। অতচ অনেক বিশেষজ্ঞ মত দিয়েছেন শুধু মাত্র কক্সবাজারের পর্যটনের আয় দিয়ে চলবে বাংলাদেশ। জাতির এমন একটি গুরুত্বপূর্ন সম্পদ কেমন হওয়া চাই ভাবনার সময় এসেছে এখন।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(কউক) হওয়ার পরেতো তেমন চোখে পড়ছে না এই শহরের বদলে যাওয়ার চিত্র। সমান তালে চলছে এলাকার অনুমোদিত নানা স্থাপনার নির্মাণ কাজ। প্রতিদিন অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠছে শত শত স্থাপনা। যেন বাঁধা দেয়ার কেউ নেই। এতে জবে করে দেয়া হচ্ছে পরিবেশ আইন। কারো কিনচিৎ পরিমানও চিন্তা নেই। কি করে বসবাস করবে এই জনপদের আগামী প্রজন্ম। শহরসহ শহরতলীর আশে-পাশে সরকারী খাস ভুমি দখলে প্রতিযোগিতা থেমে নেই। এই দখল লীলায় রয়েছে বর্তমান ও সাবেক বড় বড় রাগব বোয়ালদের নাম। এই প্রতিযোগিতায় রাজনীতির মুখোশে কারা আছে ভাল জানে এলাকাবাসী। এরা পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে নিজ সার্থের জন্য দিনে দিনে অবাসযোগ্য কক্সবাজার গড়ে তুলছেন। কারো কারো কালো টাকার খেলায় আজকের পরিত্যক্ত ভুমি কালকের রাতের আধাঁরে কাঁচা পাকা দালান। পরিকল্পিত উন্নয়ন মানে তাদের কাছে চুক্ষুশোল। শহরের যানযট নিরসনে নেই কোন স্থায়ী সমধান। লোক দেখানো কিছু প্রশাসনের পদক্ষেপ চোখে পড়লেও শান্তিতে নেই মানুষ। কোন কিছুর পরিকল্পনা নেই। রাজনৈতিক ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের কথার ফুলঝুরি অনেক শুনেছি। কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। কক্সবাজারকে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিতে বড়ই অভাব এতদাঞ্চলের সাহসি দেশ প্রেমিকের। প্রিয় কক্সবাজার কে বদলে দিতে এগিয়ে আসা দরকার যুবসমাজ ও ছাত্রজনতা।

সম্প্রতি এই কক্সবাজার পৌরসভার চেয়ার খেলায় এক চেয়ারে দুই মেয়র। এতে বুঝা যায় কেমন হবে এ শহরের উন্নয়নের চিত্র। এমন ঘটনায় আলোচনা সমলোচনা সাধরণ মানুষের মুখে মুখে এখনও। এখানে বা কি হবে এমন প্রশ্নের উত্তর জানা আছে পৌরবাসীর।

# কক্সবাজার টু টেকনাফ স্বপ্নের মেরিন ড্রেইভ সড়ক উদ্ভোধন করতে আসছেন আগামী ৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নজর দিন প্রধানমন্ত্রী অপরিকল্পিত পর্যটন নগরীর দিকে। তা না হলে আগামীতে এখানে মানুষ বসবাসের জায়গা থাকবে না। জনযটের পাপ আর লোভে হারিয়ে যাবে একদিন এই জনপদ। সেই দিন ওই জাতি আমাদেরকেই অভিশাপ দিবে অনন্তকাল।